1. admin@sylheteralap24.com : admin :
  2. kolyrahmankhan@gmail.com : editor : Jillur khan
  3. rimonahmed1993@gmail.com : Rimon Ahmed : Rimon Ahmed
  4. shakilpress2020@gmail.com : Shakil Ahmed : Shakil Ahmed
বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৫০ অপরাহ্ন

দুই শিক্ষার্থীর কাঁধে জোয়াল

  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৩

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি:নিজের গরুও নেই। অন্যের কাছ থেকে গরু বা ট্রাক্টর ভাড়া এনে কাজ করার মত টাকাও নেই। তাই বাধ্য হয়ে গরুর বিকল্প হিসেবে নিজের ছেলে ও চাচাতো ভাইকে দিয়েই হালের লাঙল টানাচ্ছেন কৃষক ইব্রাহিম। এমন হৃদয়বিদারক ঘটানাটি দেখা গেছে ময়মনসিংহের ত্রিশালে।

জানা গেছে, দুই শিক্ষার্থীর মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী গোলাম রব্বানী মাত্র পাঁচ হাজার টাকার জন্য একাদশ শ্রেণির ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি। অপরদিকে অভাবে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী হাসিম আমলার পড়াশোনাও বন্ধের পথে।

জানতে চাইলে শিক্ষার্থী গোলাম রব্বানী কাঁদতে কাঁদতে গণমাধ্যমে বলেন, মাত্র পাঁচ হাজার টাকার জন্য আমি ইয়ার চেঞ্জ পরীক্ষা দিতে পারিনি। আমার বাবাকে বলেছিলাম পাঁচ হাজার টাকা পরীক্ষার ফি হয়েছে। বাবা বলছে ২০০ টাকা পকেটে আছে। তাই আর পরীক্ষা দিতে পারেনি। আমার ইচ্ছে ছিল আমি পড়ব, কিন্তু পড়তে পারছি না। এটা আমার মনে অনেক কষ্ট, আমি পরীক্ষা দিতে পারলাম না টাকার কারণে।

চোখের পানি মুছে তিনি বলেন, আমরা মধ্যবিত্ত বলে কারও কাছে চাইতেও পারি না। আমার এক ভাইয়ের অল্প আয়ে আমাদের পুরো সংসার চলে। আমি ছোট বলে কিছু করতে পারছি না, পড়ালেখাও চালাইতে পারছি না। সরকারের কাছে অনুরোধ, লেখাপড়ার পাশাপাশি আমাকে চালিয়ে যাওয়ার কাজের সুযোগ দেয়া হোক।

অশ্রুসিক্ত গোলাম রব্বানীর বাবা আবদুল কাদের বলেন, আমি অক্ষম এক বাবা। পয়সার অভাবে ছেলের পড়াশোনার খরচ দিতে পারি না, যখন ছেলে টাকা চায় তখন আমার কাছে টেহা থাহে না, খুব কষ্ট অয়। এক ছেলের কামাই দিয়া আমার পুরা সংসার চলতাছে। মাত্র দশ শতাংশ জমি আমার। এইহানি আবাদ কইরা কোনবা আল্লাহ আমার দিন নিতাছে।

শিক্ষার্থী হাসিম আমলা বলেন, আমাদের হালচাষের কোনো গরু নেই। টাকা খরচ করে ট্রাক্টর আনার সামর্থ্যও এখন আমার বাবার নেই। তাই বাধ্য হয়েই লাঙল টানছি।

দরিদ্র কৃষক ইব্রাহিম ফকির বলেন, অল্প জমি চাষাবাদ করে পাঁচ সদস্যের সংসার এখন আর চলছে না। তাই দিনমজুরি, মাছ ধরে যখন যা পাই তাই করে বহু কষ্টে সংসার চালাচ্ছিলাম। বহু কষ্ট করে একটি ষাঁড় গরুও কিনে পালতেছিলাম। কিছুদিন আগে সেটিও হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মারা যায়। এখন নিরুপায় হয়ে ছেলে ও এক চাচাতো ভাইকে দিয়ে হালচাষ করিয়েছি। টাকার অভাবে ছেলে হাসিম আমলার পড়াশোনাও বন্ধের পথে। শুনেছি দরিদ্র কৃষকদের বিভিন্ন সহযোগিতা করে সরকার। এরকম কোনো সহযোগিতা পেলে ছেলের পড়াশোনাটা চালিয়ে যেতে পারতাম।

স্থানীয় ইউপি সদস্য বুলবুল আহমেদ (বুলু মিয়া) এ বিষয়ে গণমাধ্যমে বলেন, ইব্রাহিমের হতদরিদ্র পরিবার ও ওই শিক্ষার্থী কোনো সুযোগ-সুবিধার আওতায় আসলে অনেক উপকৃত হবে। আমার জানা মতে সে খুবই মেধাবী ছাত্র।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানিয়া রহমান বলেন, আধুনিকতার ছোঁয়ায় গরু-লাঙলের চাষ অনেকটা কমে গেছে। যে কারণে অনেক কৃষক বিকল্প পথে চাষাবাদ করছেন। নিয়ম অনুযায়ী যদি এই পরিবারটিকে কোনো সুযোগ-সুবিধার আওতায় আনা যায়, তবে তা করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জুয়েল আহমেদ বলেন, ওই কৃষকের যেহেতু কিছু জমি আছে, তাই আমাদের কৃষি প্রণোদনার আওতায় সার, বীজ দেয়ার সুযোগ আছে। অর্থাৎ সরকারের যে যে জায়গা থেকে তাকে সহযোগিতা করার সুযোগ আছে খোঁজ নিয়ে তা করা হবে। আর পড়াশোনার বিষয়ে আমরা সব সময় উপজেলা প্রশাসন সহযোগিতা করে থাকি। আশা করি তাকেও সহযোগিতা করতে পারব।

খবর পেতে সিলেটের আলাপ  লাইক পেইজে ( LIKE ) দিতে ক্লিক করুন

সিলেট আলাপ//রৌদ্দ

Facebook Comments Box
এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

© স্বত্ব সংরক্ষিত © সিলেটের আলাপ ২৪
Theme Customized By Shakil IT Park