রাবি প্রতিনিধি :রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থীসহ ১২ জনকে করেছে নগরীর দুই থানার পুলিশ। ক্যাম্পাস পার্শ্ববর্তী বিনোদপুর এলাকা থেকে দুইজন ও কোর্ট এলাকা থেকে আরও দুইজন রাবি শিক্ষার্থীসহ ১০ জনকে সন্দেহভাজন হিসেবে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জানান, তাদের আটক করা হয়নি। সন্দেহজনক মনে হওয়ায় তুলে নেওয়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ করে নির্দোষ প্রমাণিত হলে, তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবার দুপুরে রাজশাহীর সাধারণ শিক্ষার্থীরা রাজশাহী কোর্টের মেইন গেইটের সামনে থেকে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচির ডাক দেয়। তবে, পথে পুলিশের বাধার কথা চিন্তা করে তারা কর্মসূচি পরিবর্তন করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে থেকে যাত্রা শুরু করার ঘোষণা দেয়। এ কর্মসূচিতে অংশ নিতে আসার সন্দেহে দুই শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুর এলাকা থেকে আটক করে মতিহার থানা পুলিশ।
এদিকে, শিক্ষার্থীদের রাজশাহী কোর্টের প্রধান ফটকের সামনে ডাকা কর্মসূচির কারণে কোর্ট এলাকা নিরাপত্তার চাদরে মুড়িয়ে দেয়া হয়। ফলে, আন্দোলনকারীরা নির্ধারিত স্থানে ভিড়তে পারেননি। দুপুর সোয়া ২টার দিকে রাজশাহী কোর্ট এলাকার রাজশাহী দারুস সালাম কামিল মাদ্রাসার গলিতে ১২-১৫ জন যুবক পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে, পুলিশ একটি সাউন্ড গ্রেনেড ও ৫ রাউন্ড শটগান মেরে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তবে এলোমেলোভাবে কয়েকজন কোর্ট এলাকায় প্রবেশ করলে তাদের আটক করে পুলিশ। নগরীর রাজপাড়া থানা পুলিশ এই এলাকা থেকে ১০ জন শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে যায়।
বিনোদপুর এলাকা থেকে আটক হওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন, সৈয়দ বাসিতুল ইসলাম এবং মাজেদ হোসেন। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। অন্যদিকে, কোর্ট এলাকা থেকে আটক হওয়া দুইজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন, রাজশাহীর উপশহর এলাকার ওয়াকির রহমান শাওন। তিনি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনালের ফাইনান্স বিভাগের তৃতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী এবং অন্যজন হলেন তানভীর আনজুম রাকিন। তবে, সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান বাকি আটজনের মধ্যে রাবির দুই জন শিক্ষার্থী রয়েছেন।
আটক হওয়া শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবি করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক ফুয়াদ রাতুল বলেন, পুলিশ ও ডিবি কর্তৃক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক নিরপরাধ শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আন্দোলন আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। অবিলম্বে তাদেরকে মুক্তি দিতে হবে। অহিংস আন্দোলন থেকে এভাবে শিক্ষার্থী আটক ও হেনস্তার বিরুদ্ধে শিক্ষক, আইনজীবী, মানবাধিকার কর্মীসহ সর্বস্তরের জনগণকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নগরীর মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোবারক পারভেজ বলেন, তাদের আটক করা হয়নি। জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য থানায় আনা হয়েছে।
নগরীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল হক বলেন, পুলিশের গাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করার সন্দেহে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে থানায় আনা হয়েছে। এছাড়া সন্দেহজনক আরও ৮ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য থানায় আনা হয়েছে। নির্দোষ প্রমাণিত হলে, তাদের ছেড়ে দেয়া হবে।
খবর পেতে সিলেটের আলাপ লাইক পেইজে ( LIKE ) দিতে ক্লিক করুন
সিলেট আলাপ// নাহিদ